এই অস্বস্তিকর গরমের মধ্যে নির্ভরযোগ্য হচ্ছে ফ্যান অথবা এসি। কিন্তু সবার সাধ্যের মধ্যে এসি কেনা সম্ভব হয় না।
এজন্য এই গরমের মাঝে একটু গরম নিবারণের জন্য সবার হাতে একটাই অপশন থাকে। আর সেটা হল ফ্যান।
কিন্তু বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন বা লোডশেডিং এর কারণে সব সময় ফ্যান চালানো সম্ভব হয় না। এজন্য বিকল্প হচ্ছে চার্জার ফ্যান।
যার ফলে বিদ্যুৎ থাকা অবস্থায় যেমন বাতাস উপভোগ করা যায় তেমনি বিদ্যুৎ চলে গেলেও বাতাস উপভোগ করা যায়।
নিজেকে একটু ঠান্ডা রাখা যায়। যার ফলে এই গরমে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা অপশন হল চার্জার ফ্যান।
কিন্তু বাজারে অনেক কোম্পানির চার্জার ফ্যান দেখা যায়। এদের সবার মাঝে থেকে আমি আজকে ওয়ালটন চার্জার ফ্যান নিয়ে কথা বলব।
কেন বাজারে অনেকগুলো চার্জার ফ্যান থাকা সত্ত্বেও আমি ওয়ালটন চার্জার ফ্যান নিয়ে কথা বলব সেটা একটু পরেই বুঝতে পারবেন।
চার্জার ফ্যান কেনো?
এই গরম থেকে নিজেকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য অনেকগুলো অপশন আছে। যেমন কারো বাসায় হয়তো এসি আছে আবার কারো বাসায় বিদ্যুৎ চালিত ফ্যান (A/C) আছে।
আবার ঠিক অনেকের বাসায় চার্জার ফ্যান আছে। এই গরমের সময় সবচেয়ে সুবিধা জনক হচ্ছে চার্জার ফ্যান।
কারণ আপনার বাসায় যখন বিদ্যুৎ থাকবে তখন আপনি চার্জার ফ্যান ব্যবহার করতে পারবেন। এবং যখন বিদ্যুৎ থাকবে না তখনও আপনি ব্যাটারি ব্যাকআপ দিয়ে চার্জার ফ্যান চালাতে পারবেন।
এছাড়াও বর্তমানে অনেক মিনি চার্জার ফ্যান থাকায় আপনি হাতে বহন করে বা হাতে করে বাহিরে অথবা অন্য কোথাও এই ফ্যানগুলো হাতে করে নিয়ে যেতে পারবেন।
এটা বেশিরভাগ গ্রামে দেখা যায়। গ্রামে গরমের দিনে সন্ধ্যার পরে যাদের মিনি চার্জার ফ্যান আছে তারা এটা হাতে করে নিয়ে যায়।
বিশেষ করে গ্রামের রাস্তাঘাটে বের হওয়ার সময় মানুষজন এই ছোট ছোট ফ্যানগুলো হাতে নিয়ে যায়।
এছাড়াও চার্জার ফ্যান সাইজে ছোট হওয়ায় এবং বিদ্যুতের ঝামেলা না থাকায় যেকোনো সময় একই স্থান থেকে অন্য স্থানে বা এক রুম থেকে অন্য রুমে নেওয়া যায়।
এতে করে যখন যার প্রয়োজন হয় সে তার সুবিধামতো ফ্যানগুলো যেখানে সেখানে নিতে পারে।
আবার বর্তমানে অনেক ভালো ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকায় অনেকক্ষণ বিদ্যুৎ না আসলেও ফ্যানগুলো চালানো যায়।
সেই সাথে আপনি এই ফ্যানগুলোতে দুই একটা করে ইউএসবি পোর্ট দেখতে পারবেন।
এগুলো থেকে আপনি আপনার মোবাইলে চার্জ করতে পারবেন। সহজ কথায় বহন করা থেকে শুরু করে ব্যাটারি ব্যাকআপ পর্যন্ত চার্জার ফ্যান সব সময় সেরা।
কারণ আপনার ঘরের ফ্যানগুলো বিদ্যুৎ গেলেও চালানোর জন্য আইপিএস এর প্রয়োজন হয়। যেটা অনেক ব্যয়বহুল।
এবং বলা চলে বিদ্যুৎ বিল ও অনেক বেশি হয়। তাই সর্বাধিক বিবেচনায় চার্জার ফ্যান সবার জন্যই ভালো।
ওয়ালটন চার্জার ফ্যান
দেশীয় পণ্য বিবেচনায় ওয়ালটনের অন্যান্য সকল পণ্যের মতোই ওয়ালটন চার্জার ফ্যানের গুণগতমান অনেক ভালো।
এবং বাংলাদেশের বাজারে অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট এর তুলনায় ওয়ালটন এর প্রোডাক্ট গুলো অনেক ভালো হয়ে থাকে।
সেই সাথে এর দাম, ডিজাইন, ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং সহজে বহন করা থেকে শুরু করে অনেক সুযোগ সুবিধা আছে।
তাই আমি সহ অন্যান্য যে কেউ আপনাকে বলবে যে আপনি ওয়ালটন চার্জার ফ্যান ব্যবহার করুন।
বাজারে গেলে দেখবেন অনেক চার্জার ফ্যান আছে। কিছু কিছু চার্জার ফ্যানের দাম ওয়ালটন চার্জার ফ্যানের তুলনায় বেশি হতে পারে আবার কমও হতে পারে।
কিন্তু গুণগতমান বিবেচনা সব সময় ওয়ালটন চার্জার ফ্যান একটা ভালো অবস্থানে থাকবে।
তবে আমি সংক্ষেপে ওয়ালটনের চার্জার ফ্যানের কিছু ফিচার আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
১. ওয়ালটন চার্জার ফ্যানের ব্যাটারি ব্যাকআপ
ওয়ালটন একটি দেশীয় পণ্য হওয়ায় এর যেসকল ফিচার রয়েছে সেগুলোও অনেক ধারণা হয়ে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং হলো এর ব্যাটারি ব্যাকআপ।
আপনি যেকোনো চার্জার ফ্যান কিনেন কিংবা যেকোনো কোম্পানির চার্জার ফ্যান কিনেন সেক্ষেত্রে আপনার যে সুবিধাটা সবচেয়ে প্রয়োজন সেটা হল ব্যাটারি ব্যাকআপ।
কারণ আপনি যখন বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্যানটি ব্যবহার করবেন সেক্ষেত্রে অনেক লম্বা সময় ধরে ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে।
এছাড়াও ফ্যানটি কত স্পিডে বাতাস করবে সেটাও নির্ভর করে ব্যাটারি ব্যাকআপের উপর কিংবা ব্যাটারি ক্ষমতার উপর।
সেখানে এসে ওয়ালটন ফ্যানগুলোর ব্যাটারি ব্যাকআপ অনেক বেশি এবং তারা অনেক ভালো ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাটারি ব্যবহার করে।
২. হাই কোয়ালিটির মোটর
ফ্যানগুলো যখন ঘুরে তখন অবশ্যই সেটি মোটর দ্বারা ঘুরে। একটা ভালো মোটর হলে আপনার ফ্যানগুলো অনেকদিন টেকসই হয়।
এবং গরমের সিজনে ব্যবহার করার পর যখন সেগুলো বন্ধ রাখবেন সেক্ষেত্রে ভালো মোটর হলে ফ্যানগুলো নষ্ট হয় না।
আপনি পর পর অনেক সিজন ব্যবহার করতে পারবেন। আর হাই কোয়ালিটি মোটর হলে ফ্যানগুলোর বাতাস অনেক ভালো হয়।
কারণ মোটরগুলো যত স্পিডে ঘুরবে অত বেশি আপনি বাতাস উপভোগ করতে পারবেন।
৩. স্পিড সেটিং
ওয়ালটনের চার্জার ফ্যানগুলোতে আপনি একটা স্পিড সেটিং কন্ট্রোল পাবেন। যেখান থেকে আবহাওয়ার সাথে মানানসই করে ফ্যানগুলোর স্পিড বাড়াতে কিংবা কমাতে পারবেন।
এটা কম বেশি সকল চার্জার ফ্যানের থাকে। তবে বেশিরভাগ চার্জার ফ্যানের এই কন্ট্রোল গুলো অল্প দিনে নষ্ট হয়ে যায়।
যার ফলে আপনার ফ্যান যদি লো করা অবস্থায় নষ্ট হয় তাহলে আপনি পরবর্তীতে ঠিক করা না পর্যন্ত ফ্যানটি আস্তে বাতাস করবে।
মানে একবার চিন্তা করেন যে আপনি একটা চার্জার ফ্যান ব্যবহার করবেন কিন্তু কত ঝামেলার একটা ব্যাপার।
আসলে আপনি যদি একবার একটা ভালো কোয়ালিটির ফ্যান ব্যবহার করেন সেটা ওয়ালটন কিংবা অন্য কোন কোম্পানির তাহলে আপনি দীর্ঘদিন ভালোভাবে ফ্যানগুলোর বাতাস উপভোগ করতে পারবেন।
ওয়ালটন চার্জার ফ্যানের দাম দেখে নিন
বাজারে বর্তমানে বেশ কয়েকটি চার্জার ফ্যানের মডেল খুব জনপ্রিয়। দামের দিক থেকে শুরু করে ব্যাটারি ব্যাকআপ পর্যন্ত এগুলো খুব ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে।
সাধারণত এই চার্জার ফ্যানগুলোকে রিচার্জেবল ফ্যান বলা হয়। কারণ এগুলোর ব্যাটারিতে চার্জ করা যায়।
এগুলো ব্যবহার করার জন্য ওয়ালটন চার্জার ফ্যান সাধারণত 9 ইঞ্চি, ১২ ইঞ্চি এবং 14 ইঞ্চির গুলোর জনপ্রিয়তা বেশি।
কারণ এগুলো পড়ার টেবিলে সহজে সেট করা যায়। যার ফলে পড়ালেখায় সুবিধা হয়।
এছাড়াও ১৭ ইঞ্চির ফ্যানগুলো দিয়ে ছোটখাটো রুমগুলো পুরোটা কভার করা যায়।
এবং ওয়ালটনের চার্জার ফ্যানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট ফ্যান হলো ৬ ইঞ্চির ফ্যান।
এবং দাম শুরু হয়েছে,
- ৬ ইঞ্চির ফ্যান 1790 টাকা - মডেল (WRPF06A)
- 9 ইঞ্চির ফ্যান ২৩৯০ টাকা - WRTF9A
- ১২ ইঞ্চির ফ্যান ৩৯৯০ টাকা - WRTF12B
- ১৪ ইঞ্চির ফ্যান ৪৩৯০ টাকা - WRTF14B
- ১৬ ইঞ্চির ফ্যান ৬৫৯০ টাকা - WRSF16A-PBC
- ১৭ ইঞ্চির ফ্যান ৫৯৯০ টাকা - W17OA-EM-MS
- ১৭ ইঞ্চির ফ্যান ৬২৯০ টাকা - W17OA-MS
- ১৭ ইঞ্চির ফ্যান ৬৬৯০ টাকা - W17OA-AS
এখানে ১৭ ইঞ্চির তিনটা ফ্যান সম্পূর্ণ আলাদা। আপনি পাশে যে ইংরেজিতে শব্দগুলো দেখতে পাচ্ছেন এগুলো ফ্যানের মডেল।
এখানেই আপনি মডেল দেখলে বুঝতে পারবেন যে প্রতিটা ফ্যান আলাদা আলাদা।
বাসা বাড়িতে ব্যবহারের জন্য ৯ ইঞ্চি থেকে 14 ইঞ্চির ফ্যানগুলো একটু বেশি জনপ্রিয়।
আমি যে দাম গুলো বলেছি এগুলো ওয়ালটন অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করেছি। আপনি দোকানে গেলে হয়তো ভিন্ন দাম দেখতেও পারেন।
সেক্ষেত্রে দাম বাড়তেও পারে আবার দাম কমতেও পারে। তাই কেনার সময় দেখে শুনে কিনবেন।
ওয়ালটন চার্জার ফ্যান নিয়ে আমার মতামত
আসলেই গরমের দিনে অতি গরম পড়ায় আমাদেরকে একটু সচেতন থাকতে হবে। এজন্য গায়ে বাতাস লাগানো ছাড়া বিকল্প কিছু নেই।
যাদের ঘরে এসি আছে তাদের অত ঝামেলা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে লোডশেডিং এর জন্য গরমে একটু অস্বস্তিকর হয়।
সেজন্য চার্জার ফ্যান ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে চার্জার ফ্যানগুলোর দাম সাধ্যের মধ্যে থাকায় ছোটখাটো হলেও একটা ফ্যান কেন অত্যন্ত জরুরী।
তাই আপনি ওয়ালটনের একটা চার্জার ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন।
তবে আমি অবশ্যই বলব ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং অন্যান্য ফিচার মিলিয়ে ওয়ালটন ফ্যানগুলো আপনি পছন্দ করতে পারেন।
সেক্ষেত্রে কেনার আগে আপনি অন্যান্য ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যানগুলো ও দেখে নিতে পারেন। এতে করে চার্জার ফ্যান কেনার অভিজ্ঞতা একটু ভালো হবে।
শেষ কথাঃ
ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং ফ্যানের ডিজাইন সেই সাথে বহন করার সুবিধা হওয়ায় ওয়ালটন চার্জার ফ্যান একটি নির্ভরযোগ্য পণ্য।
এটিতে যেমন লোডশেডিং এ আপনি বাতাশ উপভোগ করতে পারেন সেই সাথে এই ফ্যানগুলো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
আবার অনেকদিন টেকসই হয়। তাই উভয় দিকে সুবিধা হয় আপনি ওয়ালটন চার্জার ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন।
এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার মনে যদি ওয়ালটন চার্জার ফ্যান নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না ধন্যবাদ!
0 Comments